ঠাকুরগাঁওয়ের ছেলে সবুজ আহমেদ রাণীশানের কাইল ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০০৬ সালে এইচএসসি পাস করেন। পারিবারিক সমস্যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোচিং করার সুযোগ পাননি। শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিও হননি।
আমার সহপাঠী ও বন্ধুদের অনেকেই উচ্চশিক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন। এসব দেখে সবুজ খুব হতাশ হলো। পরে ঢাকায় এসে এক আত্মীয়ের সহায়তায় তমিশনা ফ্যাশন নামে একটি সোয়েটার পোশাকে চাকরি পান।
বেতন মাত্র সাড়ে চার হাজার টাকা। টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকায় কারখানা, পাশেই একটি টিনের ঘরে থাকার ব্যবস্থা। এক ঘরে 7 জন মানুষ। এভাবে প্রায় 10 মাস কেটে গেল।
একদিন বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পারলেন, আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকা সত্ত্বেও তিনি অনার্সসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন।
সবুজ গার্মেন্টসে চাকরি ছেড়ে নিজের জমানো টাকা নিয়ে বন্ধুর কাছে যায়। ঠাকুর * গ্রামের সরকারি কলেজে ভর্তির ফরম জমা দেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মাত্র 17 দিন আগে পরীক্ষা দেওয়া 4,500 শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনি 13 তম ছিলেন। পছন্দের বিষয় বাংলায় ভর্তি হতেই টিউশনি শুরু হয়।
প্রায় দেড় বছর পর প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে মেন্ট বিভাগে প্রথম হন এবং দেশের সেরা পাঁচের একজন হন।
বিভাগীয় প্রধান মো. আমিরের পরামর্শে আমির আলী আজাদ এবং ডাঃ এর সহযোগিতায় এক্সিম ব্যাংক থেকে বৃত্তি লাভ করে, তিনি টিসি নিয়ে রংপুরের কার-মাইকেল কলেজে যান। একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরির প্রস্তুতি চলছিল।
অনার্স শেষ করে ঢাকা কলেজে মাস্টার্সে ভর্তি হন। কয়েক মাস পর তিনি ৩৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারিতে অংশ নেন।
এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড সার্ভিস সহকারী হিসেবে চাকরি পান। এরই মধ্যে কলেজের প্রভাষক হিসেবে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ক্যাডেট।
প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হওয়ায় তিনি বিমান ছেড়ে ক্যাডেট কলেজে যোগ দেন। তিনি সিলেট ক্যাডেট কলেজে বাংলা প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন এবং পড়াশোনা চালিয়ে যান।
পর্যায়ক্রমে বিসিএস, এমএ পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষা দিয়েছেন। বিসিএস ভাইবার থেকে কল এসেছে। ৩৬তম বিসিএসের ফল প্রকাশিত হয় ১২ জুন।
সবুজ বলেন, ‘আমি অনেক সমস্যার মধ্য দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে বিসিএস পাস করেছি।
আপনি যদি কঠোর পরিশ্রম করেন তবে আপনি সফল হবেন। এছাড়া সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতে হবে। ‘
সৌজন্যে: ঢাকাটাইমস