Thu. Sep 21st, 2023
পরিচ্ছন্নতা কর্মীর ছেলে সোলাইমান হলেন উপজেলার প্রথম বিসিএস ক্যাডার!

৬ ভাইবোনের মধ্যে মোহাম্মদ সোলায়মান সিকদার সবার বড়। আর্থিকভাবে নিঃস্ব, বাসস্থান থেকে টিউশনি পেতে অভাবী ছেলেটি শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে এখন বিসিএস ক্যাডার। যা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় প্রথম। মোহাম্মদ সোলায়মান সিকদার বর্তমানে আদর্শগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। সদ্য প্রকাশিত ৩৬তম বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডারে তিনি সুপারিশ পেয়েছেন।

সোলায়মান নাইক্ষ্যংছড়ি উপ-জেলার বাইশারী ইউনিয়নের ৩য় ওয়ার্ডের প্রত্যন্ত আলীক্ষ্যং গ্রামের নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তান। তার পিতার নাম আলতাফ হোসেন। বর্তমানে তিনি নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (পরিচ্ছন্নতাকর্মী) হিসেবে কর্মরত আছেন। সোলায়মানের সংগ্রামী জীবনের গল্প এখন বলছেন নাইক্ষ্যংছড়ি বা বৈশারি ইউনিয়নের মানুষ।

এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে সোলায়মান তার জীবনের উত্থান-পতনের কথা অকপটে জানান। তার বাবা ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী এবং তার মা ছিলেন একজন গৃহিণী। বিদ্যুৎ না থাকায় হ্যারি কেন প্রত্যন্ত গ্রামের একটি ভাঙা বাড়িতে পড়াশোনা করতেন। নিজ গ্রামে

প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি পার্শ্ববর্তী রামু উপ-জেলার ঈদগড় এএমবি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন। বৈশারীর আলীক্ষ্যং থেকে ঈদগড় এএমবি উচ্চ বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই অনুন্নত হওয়ায় প্রতিদিন রোদ-বৃষ্টি-ঝড় মাথায় নিয়ে ১২ কিমি পথ পাড়ি দিতে হয়; হাইস্কুলের দুর্গম কাঁচা রাস্তা ভাঙতে হয়েছে আমাকে। শৈশব-কৈশোর এভাবেই কেটে যায় সব জয়

আর জীবনের সব বাধা অতিক্রম করে তিনি এখন একজন সফল মানুষ। ছোটবেলা থেকেই সোলায়মান ছিলেন নম্র, ভদ্র ও শান্ত প্রকৃতির। তার ভদ্রতা এলাকায় এবং শিক্ষক মহলে এবং বর্তমান কর্মক্ষেত্রেও সমাদৃত। জীবনের দুর্গম পথ পেরিয়ে বর্তমান অবস্থানে পৌঁছে তিনি বলেন: বাবার সামান্য বেতনের সামান্য বেতন মাত্র।

তার সংসার চলছিল। এত আর্থিক কষ্টের মাঝেও বাবা সাধ্যমত সহযোগিতা করেছেন। ৩৬তম বিসিএসের মাধ্যমে প্রস্তাবিত * সোলায়মান ২০০৫ সালে ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতন থেকে এসএসসি এবং ২০০৬ সালে ঈদগাহ ফরিদ আহমেদ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।

পরে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের “ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি” বিভাগ থেকে 2013 এবং 2014 সালে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর নিজেকে মেলে ধরেছেন। স্বপ্নের জয় নিয়ে তিনি বলেন, ‘আসলে ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত

আসতে আসতে অনেক দূর এসেছি। অসহায় পরিবারের সন্তান হওয়ায় তিনি কখনোই ব্রেক আপ করেননি। তার জীবনের স্বপ্ন সত্ত্বেও, তিনি শ্রেণীকক্ষে পাঠ্যবইয়ের প্রতি উদাসীন ছিলেন। বর্তমান স্বপ্ন পূরণের সফলতার পেছনে

পরিবার থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তিনি। তার অনুপ্রেরণার সবচেয়ে বড় উৎস তার বাবা-মা এবং তার বাবার সংগ্রামী জীবন। সলোমন ছাত্র হিসেবে লেখালেখি শুরু করেন। রোহিঙ্গা সংকট ও ভূ-রাজনীতি, প্যালেস্টাইন

সংকট, কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা, ইরাক ও কুর্দিস্তান সংকট এবং কোরীয় উপদ্বীপ সংকট: দুই কোরিয়ার পুনর্মিলনের ভবিষ্যত, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও রাজনীতি, বৈশ্বিক পরিবেশ এবং বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে কাজ করার সুযোগ। এ জন্য বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে গবেষণা ও শিক্ষাদানের মহান ব্রত নিয়ে আগামীতে মাতৃভূমির সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে চান। গ্রামের একজন শিক্ষার্থীর সাফল্যের কথা জানতে চাইলে ড

মোঃ শাহ আলম, অধ্যাপক, বাংলা বিভাগের, হাজী এম এ কালাম ডিগ্রী কলেজ, নাইক্ষ্যংছড়ি, বলেন: “সাফল্যের জন্য মেধার পাশাপাশি ধৈর্য, ​​ইচ্ছাশক্তি এবং কঠোর পরিশ্রম প্রয়োজন,” তিনি বলেন। একজন শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতামূলক শহরে না থাকলেও

একটি গ্রাম কীভাবে তার প্রাকৃতিক প্রতিভা দিয়ে সফল হতে পারে তার এটি একটি বাস্তব উদাহরণ। তিনি মনে করেন, নাইক্ষ্যংছড়ির প্রথম বিসিএস ক্যাডার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রীর অনুভূতির অন্যতম ভাগীদার। এদিকে বাইশারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম ও আলীক্ষ্যংমৌজার প্রধান সোলায়মান হ্লা মারমা জানান, সোলায়মান তার ছেলে।

বাবার স্বপ্ন পূরণ। আমরা বিশ্বাস করি তার বন্য ক্যারিয়ার গ্রামের ছেলে-মেয়েদের সহযোগিতায় অবদান রাখবে। এ সাফল্যে বাইশারী ও নাইক্ষ্যংছড়ির মানুষের মুখ উজ্জ্বল হয়েছে বলে জানান তারা।