আমার বাবা একজন স্কুল শিক্ষক এবং আমার মা একজন গৃহিণী ছিলেন। পৃথিবীর পরিধিও ছিল বিস্তৃত। নয় ভাইবোনের বড় সংসারটাকে একাই টেনে নিয়েছিলেন বাবা। সবাইকে শিক্ষিত করেছেন। পরিবারের প্রত্যেকেরই স্নাতক ডিগ্রি রয়েছে।
তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। পড়ালেখায় বেশ মেধাবী। ৩৫তম বিসিএসে অংশ নিয়েছেন বাজিমাত। প্রশাসন ক্যাডারে প্রথমবারের মতো সুযোগ হলো বাংলাদেশ পুলিশে। ক্যারিয়ারেও তিনি সফল। এতদিন যার কথা বলছিলাম তিনি হলেন এসপি জিহাদুল কবির। রিফাত কান্তি সেন তার সাফল্যের গল্প বলেছেন-
জিহাদুল কবির ১৯৬৫ সালের ৪ জানুয়ারি বাগেরহাট জেলার কাজাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আহমেদ আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। মা আয়েশা একজন গৃহিণী।
ছয় বোন ও তিন ভাইয়ের পরিবারে জিহাদুল সবার ছোট। ছোটবেলা থেকেই বাবার আদর্শ লালন করে আসছেন তিনি। পড়াশোনা তাকে অনেক আকৃষ্ট করেছিল।
তাই সর্বোপরি তিনি পড়ালেখাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। যদিও তিনি খুব সাহসী ছিলেন না, তবে তিনি ক্রিকেটের খুব পছন্দ করতেন। পাড়ার মাঠে মাঠে হাঁটতেন।
পরিবারের সবাই উচ্চ শিক্ষিত। যেহেতু সে ছোট, আমি সবসময় ভাবতাম তারও উচ্চ শিক্ষা নেওয়া উচিত।
তিনি 1990 সালে কারাপাড়া শরৎচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। তিনি 1992 সালে বাগেরহাট পিসি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি 1997 সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বনবিদ্যায় অনার্সে বিএসসি পাস করেন।
ছোটবেলা থেকেই জিহাদুল কবিরের স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু বড় হতে না চেয়ে বিসিএস পরীক্ষায় মনোযোগ দেন।
টানা দুই বছর চার বন্ধুর সঙ্গে ঢাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দিনরাত লেখাপড়া করেন। শেষ পর্যন্ত প্রকৌশলীর পরিবর্তে বিসিএস অফিসার হন।
বিসিএসের গল্প: পড়ালেখাকে তিনি এতটাই গুরুত্ব দিয়েছিলেন যে এক সময় সাফল্য তাকে আঁকড়ে ধরেছিল। ২০তম বিসিএসে অংশগ্রহণ করে প্রথমবারের মতো সফল হন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
বিসিএসের আগে সরকারি চাকরি করতেন। কক্সবাজারে এসিএফ. সেখানে তিনি দুই বছর কাজ করেন। 2001 সালে 20 তম বিসিএস পরীক্ষায় টিকে থাকার পর তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুলিশের এএসপি হিসেবে যোগ দেন।
জিহাদুল কবির জাগো নিউজকে বলেন, “কাউকে সম্মান করলে সম্মান পাবে। সম্মান ছাড়া সম্মান আশা করা বোকামি।’
তিনি বিশ্বাস করেন যে তিনি যেখানেই যান না কেন, তিনি মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করেন। বিনিময়ে তিনি সাধারণ মানুষকেও ভালোবাসা দিয়েছেন। ”
তিনি আরও বলেন, “বিসিএস পরীক্ষায় টিকে থাকাই তার বড় সাফল্য। তিনিও তার ক্যারিয়ারে মানুষের ভালোবাসাকে সাফল্য হিসেবে দেখেন।
কর্মজীবনে সাফল্য পাবনায় চরমপন্থীদের উৎখাত করা। তিনি এ পর্যন্ত ৪টি জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে জনগণের সেবা করেছেন। ”
জিহাদুলের প্রথম পদায়ন ছিল গৌরনদী সার্কেল (এএসপি)। এরপর তিনি সীতাকুণ্ড, ঢাকা মেট্রো, এসি ডিবি, এসি এমটি, এডিসি পরিবহনে কর্মরত ছিলেন। এরপর আসে মিশনের পালা। তিনি এক বছরের জন্য 2006 সালে আইভরি কোস্টে চলে যান।
সেখান থেকে ফিরে গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেন। এরপর আবার যোগ দেন ঢাকা মেট্রোর এডিসি হিসেবে। সেখান থেকে তিনি আবার লাইবেরিয়া মিশনে যান।
সেখান থেকে ফিরে তাকে ঝিনাইদহ জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদায়ন করা হয়।
2012 সালে, তিনি মাগুরা জেলার প্রথম পুলিশ সুপার হিসেবে নিযুক্ত হন। বর্তমানে তিনি রাজবাড়ী, পাবনা হয়ে চাঁদপুরে পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আছেন।
তথ্যসূত্র: জাগো নিউজ